বিচারের নামে ছাত্রকে পেটালেন মাদ্রাসার সভাপতি ও শিক্ষক

বিচারের নামে ছাত্রকে পেটালেন মাদ্রাসার সভাপতি ও শিক্ষক

বিচারের নামে ইউসুফিয়া রশিদিয়া হাফিজিয়া নুরানি মাদ্রাসার হেফজ শাখার ছাত্র রবিউল ইসলাম (১২) নামে এক ছাত্রকে ওই মাদ্রাসার সভাপতি ও এক শিক্ষক মারধর করেছেন। স্বজনরা আহত ছাত্রকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন।

বুধবার রাতে আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার আমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিশুটির বাবা দুলাল ফকির।

পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত শিক্ষক মো. মাহবুব আলম ও সভাপতি মো. আবুল চৌকিদার গা-ঢাকা দিয়েছেন।

জানা গেছে, উপজেলার উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামের দুলাল ফকিরের ছেলে মো. রবিউল ইসলাম (১২) একই গ্রামের ইউসুফিয়া রশিদিয়া হাফিজিয়া নুরানি মাদ্রাসায় হেফজ শাখায় লেখাপড়া করে আসছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় সহপাঠী নাঈমের সঙ্গে জুতা পায়ে দেয়া নিয়ে তার কথাকাটাকাটি হয়।

এ বিষয়ে সহপাঠী নাঈম মাদ্রাসার শিক্ষক মো. মাহবুব আলমের কাছে অভিযোগ দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক মাহবুব আলম ও মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. আবুল চৌকিদার ছাত্র রবিউলকে বিচারের নামে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে বলে অভিযোগ ছাত্র রবিউলের।

কঞ্চির আঘাতে রবিউল রক্তাক্ত জখম হয়। খবর পেয়ে ওই রাতে স্বজনরা শিশু রবিউলকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় রবিউলের বাবা দুলাল ফকির বৃহস্পতিবার আমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনার পরপর অভিযুক্ত শিক্ষক মাহবুব আলম ও মাদ্রাসা সভাপতি আবুল চৌকিদার গা-ঢাকা দিয়েছেন।

আহত রবিউল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার সহপাঠী নাঈমের সঙ্গে জুতা পায়ে দেওয়া নিয়ে সামান্য কথাকাটাকাটি হয়। এ নিয়ে মাদ্রাসার সভাপতি আবুল চৌকিদার ও শিক্ষক মাহবুব আলম আমাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে। আমি তাদের হাতে-পায়ে ধরেও রক্ষা পাইনি।

শিশুটির বাবা মো. দুলাল ফকির বলেন, রক্তাক্ত অবস্থায় আমার ছেলেকে মাদ্রাসা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছি।

তিনি আরও বলেন, এ বিষয় আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এ ঘটনার বিচার চাই।

মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবুল চৌকিদার ও শিক্ষক মাহবুব আলম ছাত্র রবিউলকে বিচারের নামে মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, কয়েকটি চড়-থাপ্পড় দেওয়া হয়েছে।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মিজানুর রহমান বলেন, শিশু রবিউলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

আমতলী থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন